আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র

 আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র (Alutila Tourist Center), খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় অবস্থিত। পর্যটন স্পট, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, রহস্যময় গুহা এবং পাহাড়ি পরিবেশের জন্য আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র বিশেষ পরিচিত।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ ফুট ওপরে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ এখন ঝুলন্ত ব্রিজ। দুই পাহাড়কে যুক্ত করতে তৈরি করা হয়েছে ১৮৪ ফুট দীর্ঘ লোহার এই সেতু বা ক্যাবল ব্রিজ। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য সেতুতে রয়েছে কাচের বারান্দা। কাচের বারান্দা দিয়ে নিচে তাকালে পাহাড়ের অন্য রকম দৃশ্যের দেখা মেলে। মনে হবে, আপনি পাহাড়ের ওপর ভাসছেন।

সেই সঙ্গে রয়েছে নন্দনকানন, রোমান কোলোসিয়ামের আদলে মঞ্চ ও ওয়াচ টাওয়ার। গুহায় একটা রোমাঞ্চকর অভিযানের পর ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে একটা প্রশান্তির নিশ্বাস নিঃসন্দেহে সব ক্লান্তি দূর করে দেবে।

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে কি দেখবেন

আলুটিলা পাহাড়

আলুটিলা পাহাড় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩,০০০ ফুট উঁচু। পাহাড়ের চূড়া থেকে চারপাশের সবুজ বনভূমি, চেঙ্গী নদী এবং শহরের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এখানে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, বসার স্থান এবং বিশ্রাম কক্ষ রয়েছে। এছাড়া, পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য আপনাকে অন্যরকম মানসিক প্রশান্তি দিবে।

আলুটিলা গুহা

আলুটিলা গুহা, স্থানীয়ভাবে ‘মাতাই হাকড়’ বা ‘দেবতার গুহা’ নামে পরিচিত, একটি প্রাকৃতিক গুহা যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫০ ফুট। গুহার ভিতর সবসময় অন্ধকার থাকে, তাই প্রবেশের সময় মশাল বা টর্চলাইট সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন। গুহায় প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ৪০ টাকা টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। গুহার এক প্রান্ত দিয়ে ঢুকে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের হতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে।

আলুটিলা গুহার কাছেই রয়েছে রিসাং ঝর্ণা। আলুটিলায় ঘুরতে এসে এত কাছের ঝর্ণাটি না দেখে চলে যাওয়া মোটেও ঠিক হবে না।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি: ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে শান্তি, হানিফ, এস আলম, শ্যামলী, ইকোনো এবং ঈগল পরিবহনের এসি বা নন-এসি বাসে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। বাসের ক্লাস অনুযায়ী ভাড়া ৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি: চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে বি আর টি সি ও শান্তি পরিবহণের বাসে যেতে পারবেন। এছাড়া বেশ কিছু লোকাল বাসও খাগড়াছড়ি যায়।

খাগড়াছড়ি থেকে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র: খাগড়াছড়ি শহর থেকে আলুটিলা প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে। সিএনজি, মোটরবাইক বা চান্দের গাড়ি ভাড়া করে সহজেই সেখানে পৌঁছানো যায়। চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করতে ২০০০-৩০০০ টাকা এবং সিএনজি রিজার্ভ করতে ৮০০-১০০০ টাকা খরচ হতে পারে।

কোথায় থাকবেন

খাগড়াছড়ি শহরে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এইসব হোটেলে নূন্যতম ৫০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকা খরচ হতে পারে এক রাত থাকতে। উল্লেখযোগ্য হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে পর্যটন মোটেল, হোটেল গাইরিং, অরণ্য বিলাস, গিরি থেবার ও হোটেল ইকো ছড়ি ইন।

ভ্রমণ পরামর্শ

  • গুহায় প্রবেশের সময় মশাল বা টর্চলাইট সঙ্গে নিন।
  • মশাল ব্যবহার শেষে ভালো করে নিভিয়ে ফেলুন।
  • ভালো গ্রিপের জুতা পরুন।
  • গুহার ভিতরে উচ্চস্বরে কথা বলা বা উল্লাস করা থেকে বিরত থাকুন।
  • পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন।

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। প্রাকৃতিক গুহা, পাহাড়ি দৃশ্য এবং শান্ত পরিবেশের সমন্বয়ে সুন্দর ভ্রমন অভিজ্ঞতা প্রদান করে যে কোন পর্যটককে। আপনার পরবর্তী ভ্রমণ তালিকায় আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

ভ্রমণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ এবং জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে

 ম্যাপে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র

শেয়ার করুন সবার সাথে

facebook sharing button Share
messenger sharing button Share
whatsapp sharing button Share
sharethis sharing button Share
দৃষ্টি আকর্ষণ: যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের দেশের সম্পদ। প্রকৃতি ও সৌন্দর্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল নাও থাকতে পারে। অনুগ্রহ করে আপনি কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার পূর্বে বর্তমান তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নিয়ে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এইসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই বাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ভ্রমণ গাইড দায়ী থাকবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ