ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য কি?
যারা ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কে এক বিষয় ভেবে থাকেন মূলত তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল। একদম সোজা কথায় ওয়েব ডিজাইন হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে তা ঠিক করে সেই অনুযায়ী কাজ করা। আবার অন্যদিকে ওয়েব ডেভলপমেন্ট হচ্ছে সেই ডিজাইনকে ফলো করে কোডিংয়ের মাধ্যমে একটি নতুন ওয়েবসাইটের জন্ম দেওয়া। মূলত একজন ব্যবহারকারী যাতে ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করতে পারে সেই কাজটিই করে থাকে একজন ওয়েব ডেভলপার। এবার আশি করি বুঝতে পেরেছেন কেনো ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পূর্ণ আলাদা বিষয় বলে মনে করা হয়। বর্তমানে UI/UX ডিজাইন হিসেবে ওয়েব ডিজাইন জনপ্রিয়। আবার ওয়েব ডেভলপমেন্টকে ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ব্যাক এন্ড ডেভলপমেন্টে ভাগ করা হয়েছে।
ওয়েব ডিজাইন কি?
একটি ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে বা এর সাধারন রূপ কেমন হবে তা নির্ধারণ করার কাজ করা হয় এই ওয়েব ডিজাইন সেক্টরে। মোটকথা একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েব সাইটের টেম্পলেট বানানোই হলো ওয়েব ডিজাইনারের কাজ। লেআউটের হেডারে কোথায় মেনু থাকবে, সাইডবার হবে কিনা, ইমেজগুলো কোথায় বসবে তা সেট করা হয় ওয়েব ডিজাইনিং এর মাধ্যমে। ওয়েবসাইট এবং তাতে থাকা কন্টেন্টকে কিভাবে দেখানো হবে সেটা ঠিক করে দেই একজন ওয়েব ডিজাইনার। কিছু প্রোগ্রামিং, স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ এবং মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে এই কাজগুলি করা হয়।
ওয়েব ডিজাইন এর কাজগুলি কি কি?
ওয়েব ডিজাইন করতে হলে আপনাকে অনেক কাজই শিখতে হবে। ইন্টারনেটে আমরা একটা ওয়েবসাইটে যা দেখি তাই ডিজাইন করার জন্য ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে হয় এবং এই কাজটি করে থাকেন একজন ওয়েব ডিজাইনার। একটি ইউজার ওয়েবসাইটে কি রং ব্যবহার করলে ইউজারের কাছে ভালো লাগবে কিংবা কোন জিনিসটা কোন জায়গায় রাখলে পারফেক্ট হবে তা ঠিক করে দেয় একজন ওয়েব ডিজাইনার। এক্ষেত্রে তাকে যে যে কাজগুলি করতে হয় সেগুলি হলোঃ-
রিলেভেন্ট কন্টেন্ট
প্রতিটি ওয়েবসাইটের ম্যাসেজ হিসেবে ধরা হয় এই কন্টেন্টকে। একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কি বলতে চান সেটা ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য এবং এই কন্টেন্ট কোথায় বসালে ভালো হবে তা ঠিক করার জন্য একজন ওয়েব ডিজাইনারকে কন্টেন্ট ম্যানেজিং বা ডিজাইনিং সম্পর্কে জানতে হয়।
লেআউট
একটি ওয়েবসাইট কিভাবে দেখাতে চান তা ডিজাইন করার জন্য লেআউট ব্যবহৃত হয় এবং একজন ওয়েব ডিজাইনারের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলির মধ্যে একটি হলো লেআউট সম্পর্কে জানা এবং তা নিয়ে সাইটের ডিজাইন করা। তবে মাঝেমধ্যে এটি কিভাবে সাজানো হবে তা আপনার কাস্টমার বা ক্লায়েন্ট বলেও দিতে পারে।
কালার কম্বিনেশন
রং সঠিকভাবে সিলেক্ট করার উপর একটা ওয়েব সাইটের সৌন্দয্য নির্ভর করে। এক্ষেত্রে কাস্টমারের পছন্দমতো রং সিলেক্ট করা উচিত। যদি ক্লায়েন্ট বলতে না চায় তবে আপনি ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য আর কিসের ওয়েবসাইট তা দেখে ইজিলি সে অনুযায়ী একটি রং সিলেক্ট করে ফেলতে পারেন।
সঠিক গ্রাফিক্স
ওয়েব ডিজাইন করতে গেলে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর উপর মোটামুটি ধারণা আপনাকে রাখতেই হবে। কেননা লোগো, ছবি, আইকন এ-সব ডিজাইন করতে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব কন্টেন্ট সঠিক জায়গায় সঠিক জিনিস বসাতে পারলেই আপনার তৈরি করা ওয়েবসাইট সঠিকভাবে প্রেজেন্ট করা যাবে৷
সঠিক ফন্ট সিলেকশক
বিভিন্ন ধরণের ফন্ট বিভিন্ন ওয়েবসাইটকে বিভিন্ন রূপ দিতে পারে। ওয়েবসাইটে ব্যবহার করা টেক্সটে আপনাকে বিভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করে সাইটটিকে ফুটিয়ে তুলতে জানতে হবে।
নেভিগেশন
ওয়েবসাইটে যে মেনুবার দেখা যায় সেটিই হলো মূলত মেনুবার। ওয়েবসাইটের সবগুলো বিষয় যেনো সহজেই ইউজার খুঁজে পায় সেজন্যই প্রতিটি ওয়েবসাইটে একটি মেনুবার থাকে এবং একজন ওয়েব ডিজাইনাারকে সেই মেনুবার সেট করতে জানতে হয়।
মাল্টিমিডিয়া
ভিডিও কিংবা অ্যানিমেশন ব্যবহার করে ইউজারকে ওয়েবসাইট সম্পর্কে আরো ডিটেইলসে বোঝানোর জন্য সাইটে মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট রাখা খুবই জরুরি। ইউজার আপনার বক্তব্য বা ম্যাসেজ সহজেই আপনাকে সাইটে মাল্টিমিডিয়াও সেট করে নিতে হবে।
ওয়েব ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায়?
বাংলাদেশে মোটামুটি লেভেলের একজন ওয়েব ডিজাইনারের আনুমানিক গড় আয় মাসিক ৳২৫,০০০ টাকা। তবে দক্ষতার জোরে এই এমাউন্ট মাসিক ৳৪০০,০০০ টাকা থেকে ৳৭০০,০০০ টাকাতেও নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি?
একটি ওয়েবসাইটের এ্যাডমিন প্যানেলের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের বাহিরের অংশের ফ্যাংশনাল করার কাজই হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ। বিভিন্ন থিম ইনস্টল করার পর থিম ডিজাইন বা ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য যেসব অপশন পাওয়া যায় তা তৈরি করে ওয়েব ডেভলপারেরা। ক্লিক এন্ড ড্রাগ ড্রপ করার যে ফ্যাংশন ব্যবহার করে ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর কাজ করা হয়ে থাকে।



0 মন্তব্যসমূহ